পুনর্বাসন না দিলে 'নোটা'-র ব্যবহার, জানিয়ে দিল কলকাতার বস্তি থেকে উচ্ছেদ হওয়া ৩০০-র বেশি পরিবার
২০১২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত তপসিয়ার ওই বস্তিতেই মোট ৩৮৩টি পরিবারের বসবাস ছিল। সেই বস্তির ৩১/১ তিলজলা রোডের ঠিকানা হিসাবেই রয়েছে তাঁদের ভোটার কার্ডও। সাম্প্রতির লোকসভা নির্বাচনের ভোটার তালিকাতেও নাম রয়েছে তাঁদের। ফ্লাইওভার তৈরি হবে বলে বিনা বিজ্ঞপ্তিতেই এদের বস্তি থেকে উচ্ছেদ করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মুমতাজ বেগমের কথায়, ২০১২ সালে কোনও বিজ্ঞপ্তি ও পুনর্বাসন প্যাকেজ ছাড়াই বস্তি ছাড়তে বাধ্য করা হয় তাঁদের। ক্ষতিপূরণ হিসাবে কাউকে কাউকে ১২০০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। অনেকে আবার মাত্র ১০০০০ টাকাই পেয়েছেন। এরকম অনেকেই রয়েছেন যাঁরা কোনও ক্ষতিপূরণই পাননি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ঘটনার পরেও স্থানীয় নেতারা বা সরকারের তরফেও কোনওরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কীভাবে এই বস্তির উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দাদের দিন গুজরান হচ্ছে তা নিয়েও মাথা ঘামায় রাজনৈতিক নেতারা। এতদিন ধরে পুনর্বাসনের জন্য গলা ফাটিয়েও কেনও লাভ হয়নি। তাই এবার বিদ্রোহের পথেই নেমেছে পরিবারগুলি। জানিয়ে দিয়েছে, এবার পুনর্বাসন না দিলে রাজনৈতিক দলগুলিকে ভোটও নয়, জানিয়ে দিলেন বিক্ষুব্ধ ঘরছাড়া মানুষগুলি।
গত বছর সুপ্রিম কোর্টের তরফে এই নোটা পদ্ধতি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। নোটার মাধ্য়মে ভোটারের অধিকার থাকবে সমস্ত প্রার্থীদের বাতিল করে নিজের মত দেওয়ার জন্য।
রাইট টু সেফ অ্যান্ড ইন্ডিপেন্ডেন্ট হাউজিংয়ের এর আওতায় যাঁদের বৈধ সচিত্র পরিচয় পত্র রয়েছে, তাঁদের কোনও বিজ্ঞপ্তি ও পুনর্বাসন না দিয়ে হঠাৎ করে উচ্ছেদ করা যায় না। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, এই বস্তিতে বসবাসকারী বেশিরভাগই রিক্সাচালক, কাগজ কুড়ানি, ভিক্ষাপ্রার্থী ছিলেন। এদের প্রত্যেকরই আয় দৈনন্দিন হিসাবে হতো। মাসে টেনেটুনে দেড় থেক দু'হাজার টাকা আয় হতো। যারা আমাদের সমস্যায় আমাদের পাশে এসে দাঁড়াননি তাদের কেন ভোট দেব প্রশ্ন তপসিয়ার বস্তি থেকে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলির।