মোদী-লহর মিডিয়ার বানানো, বলছেন 'জনবিচ্ছিন্ন' মনমোহন সিং
বৃহস্পতিবার অসমে নিজের ভোটটি দিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তাঁর স্ত্রীও এদিন ভোট দেন। দিসপুর গভর্নমেন্ট হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ১৮৮ নম্বর বুথে সকালে ভোট দিতে আসেন তিনি। নয়াদিল্লি থেকে বিশেষ বিমানে তাঁকে উড়িয়ে আনা হয়। গতকাল থেকেই এই ভোটকেন্দ্রের চারপাশে কার্যত দুর্গ গড়ে তোলা হয়েছিল। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি এসপিজি কমান্ডোরা ছিল নিরাপত্তার দায়িত্বে। গুয়াহাটির লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে হেলিকপ্টারে আসেন খানাপাড়া মাঠে। সেখান থেকে কালো রঙের বিএমডব্লুতে চেপে সোজা বুথে। ভোটার তালিকায় মনমোহন সিং এবং তাঁর স্ত্রী গুরশরণ কউরের নাম রয়েছে যথাক্রমে ৬৮৮ এবং ৬৮৯ নম্বরে। প্রধানমন্ত্রীর এপিক (ভোটার কার্ড) নম্বর হল, ডিজেডএন ১৮৪২১৪৪ এবং গুরশরণ কউরের এপিক নম্বর হল, ডিজেডএন ১৮৪২১৫৫।
দু'জনের ভোট দিতে লাগে ঠিক মিনিট চারেক। তার পর বুথের বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মিনিট ছয়েক কথা বলেন ঘড়ি ধরে। মনমোহন সিং নিজে রাজ্যসভা থেকে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী কুর্সিতে বসেছেন। তবুও সাধারণ মানুষের মনের ভাব পড়ে ফেলেছেন, এমন ভঙ্গিতে বলেন, "আমার মনে হয় না, সারা দেশ মোদী-লহরে ভাসছে। মোদী-লহর বলে কিছু নেই। সবটা মিডিয়ার বানানো।"
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আরও বলেন, "আমার মনে হয় না, কংগ্রেস জমি হারাচ্ছে। ভোটে ভালো ফল করবে কংগ্রেস। এ দেশের একজন নাগরিক হিসাবে আমি গুয়াহাটিতে এসেছি ভোট দিতে। সব নাগরিককে অনুরোধ করব, তাঁরা যেন ভোট দেন।"
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দৌলতে সংশ্লিষ্ট বুথের ভোটারদের বেজায় হেনস্থা হতে হয়। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের নানা ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। ভোট দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী চলে গেলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন সাধারণ ভোটাররা। এ নিয়ে পরে তাঁরা ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, নরেন্দ্র মোদী তবুও লোকসভা নির্বাচনে সাধারণ মানুষের ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মনমোহন সিং তো নিজে রাজ্যসভার সদস্য। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে জেতেননি। মাটির সঙ্গে সম্পর্কই নেই। তা হলে মোদী-লহর নেই, তা কি সত্যিই বুঝতে পেরেছেন? নাকি শিখিয়ে দেওয়া কথা বললেন এবারও?