শিল্প-কর্মসংস্থানে জোয়ার আনতে 'মেক ইন ইন্ডিয়া' শুরু করছেন প্রধানমন্ত্রী
'ভাইব্র্যান্ট গুজরাত' মডেলের আদলে এ বার শুরু হচ্ছে 'মেক ইন ইন্ডিয়া' কর্মসূচি। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এই পরিকল্পনা খুবই ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২৫ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে এই কর্মসূচির সূচনা হবে।
কী এই 'মেক ইন ইন্ডিয়া'?
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় নরেন্দ্র মোদী আয়োজন করতেন 'ভাইব্র্যান্ট গুজরাত' কর্মসূচির। দেশ ও বিদেশের শিল্পপতিরা এতে অংশ নিতেন। গুজরাতে বিপুল পুঁজি বিনিয়োগের অন্যতম কারণ হিসাবে ধরা হয় 'ভাইব্র্যান্ট গুজরাত'-কে। কারণ এ ধরনের বৈঠকের আয়োজন করে অনেক শিল্পপতির সঙ্গেই ব্যক্তিগত সখ্য গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আজ গুজরাত দেশের অন্যতম সমৃদ্ধশালী রাজ্য।
ঠিক এ ধরনের মডেলই এ বার জাতীয় ক্ষেত্রে আনতে চান প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে মূলত বিদেশি শিল্পপতিদের বেছে নেওয়া হচ্ছে। তবে দেশের বড় বড় কোম্পানির কর্তারাও হাজির থাকবেন নরেন্দ্র মোদীর অনুরোধে। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে ৩০ হাজার কোম্পানিকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে 'মেক ইন ইন্ডিয়া' কর্মসূচিতে।
প্রধানমন্ত্রী চাইছেন, যে যে ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের হার বেশি, সেখানে পুঁজি ঢালুন দেশ-বিদেশের শিল্পপতিরা। অটোমোবাইল, অসামরিক বিমান পরিবহণ, পর্যটন ব্যবসা, ভোগপণ্য নির্মাণ, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ আসুক।
শুধু ভাষণ দিয়ে কাজ সারতে রাজি নন তিনি। তাই ডিআইপিপি (ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি অ্যান্ড প্রোমোশন) এবং বণিক সংগঠন ফিকি-র পরামর্শে আটজন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এরাই শিল্প প্রস্তাব, বিনিয়োগের প্রাথমিক ব্যাপারগুলি খতিয়ে দেখবে। কোনও পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের যেন অসুবিধা না হয়, এই বার্তা আমলাদের দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একটি আলাদা হেল্প ডেস্ক থাকবে। তাতেও যদি শিল্পপতিরা সন্তুষ্ট না হন, তা হলে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন গ্রিভান্স রিড্রেসাল সেলে। ৪৮ ঘণ্টায় অভিযোগের সুরাহা হবে। দরকারে হস্তক্ষেপ করবেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের আমলারা। লাল ফিতের বাঁধনে যেন শিল্পে বিনিয়োগ মার না খায়, এই বার্তাই দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, 'সহজে ব্যবসা' করা যায় যে দেশগুলিতে, তার মধ্যে ভারতের স্থান ১৩৪ নম্বরে। ১৮৯টি দেশকে নিয়ে এই তালিকা তৈরি করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। এই রিপোর্টে না-খুশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি চান ভারতকে প্রথম কুড়িতে নিয়ে আসতে। তবেই চীন বা ইউরোপের সঙ্গে ভারত পাল্লা দিতে পারবে আর্থিক সমৃদ্ধিতে। এ জন্য প্রথমেই মান্ধাতা আমলের নিয়মকানুন বদলে পুঁজি বিনিয়োগের পথকে সহজ করতে হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।