সারদা-কাণ্ডে সিবিআই নজরে মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক, আবারও জেরা
তদন্তে সিবিআই জানতে পেরেছে, প্রায়ই সল্ট লেকের মিডল্যান্ড পার্কে সারদা গোষ্ঠীর অফিসে যেতেন বাপি করিম। সেটা ২০১১-১২ সাল। গভীর রাতে তিনি ঢুকতেন। বেরিয়ে যেতেন হাতে মোটা প্যাকেট নিয়ে। সন্দেহ, ওই প্যাকেটে করে টাকা থাকত। প্রাথমিক তদন্তে সিবিআই দেখেছে, মন্ত্রীর সামান্য আপ্তসহায়ক ছিলেন কয়েক মাস। কিন্তু ওই অল্প সময়েই বেনামে অনেক সম্পত্তি করে নিয়েছেন। সোজা কথায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামসঞ্জস্য নেই। তাই সিবিআইয়ের নজরে পড়েছেন তিনি। সব টাকা বাপি করিম একাই হজম করেছেন বাপি ওরফে রেজাউল করিম নাকি তা ভাগ দিয়েছে কাউকে, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সারদা গোষ্ঠীর ব্যবসা বৃদ্ধির পিছনে মদন মিত্রের কী ভূমিকা ছিল, তাও জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে।
আরও পড়ুন: বিজেপি কি ললিপপ চুষছিল, সারদা ইস্যুতে সুর চড়ালেন মমতা
কে এই বাপি করিম? মোমিনপুরের একটি নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে। তাঁর ভাই বাবলু করিম ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। বাবলু করিম পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সেই সুবাদে বাপিও তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ভবানীপুরে চন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে একটি নার্সারি স্কুলে কাজ পান। সেখানে কাজ করতে করতেই পার্টির হয়ে খিদমত খাটতেন। ঘটনাচক্রে মদন মিত্রের চোখে পড়ে যান। মন্ত্রী হওয়ার পর মদনবাবু তাঁকে নিজের আপ্তসহায়ক পদে নিয়োগ করেন। সল্ট লেকের একটি সরকারি অতিথিশালায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন। অভিযোগ, সেখানে অসংযমী জীবনযাপন শুরু করেন। ২০১১-১২ সালে তিনি আপ্তসহায়কের দায়িত্ব সামলান। বাপি করিমের বিরুদ্ধে নানা অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ ওঠায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিন মদন মিত্রকে ডেকে ভর্ৎসনা করেন। তার পরই তাঁকে আপ্তসহায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেন মদনবাবু।
২০১২ সালের শেষ দিকে এক মহিলা গড়ফা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে জানান, বাপি করিম তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টা করেছেন। এই মামলায় তিনি আগাম জামিন নিলেও মামলাটি চলছে আদালতে। এমনকী, রাজারহাটের ফ্ল্যাটে তৃণমূল নেত্রী পিয়ালি মুখোপাধ্যায়ের রহস্যজনক মৃত্যুতেও নাম জড়িয়েছিল বাপি করিমের।