ঘাসফুলের ভিড়ে পদ্ম ফুটিয়ে ইতিহাস গড়লেন শমীক
বসিরহাট দক্ষিণ আসনে ১৫৮৬ ভোটে জিতে রাজ্য বিধানসভায় পা রাখতে চলেছেন শমীক ভট্টাচার্য। এককভাবে লড়াই করে এই প্রথম বিধানসভা ভোটে জিতল বিজেপি। এর আগে ১৯৯৯ সালে অশোকনগর থেকে জিতে বিধানসভায় গিয়েছিলেন বিজেপির বাদল ভট্টাচার্য। কিন্তু তখন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছিল তাদের। ফলে একক শক্তির ওপর নির্ভর করতে হয়নি। এ বার এককভাবে জিতলেন শমীক ভট্টাচার্য।
অথচ সকালে যখন ভোটগণনা শুরু হয়েছিল, তখন উচ্ছ্বসিত ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পঞ্চম রাউন্ড পর্যন্ত এগিয়ে ছিলেন শাসক দলের প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাস। ১৭ হাজার ভোটে। কিন্তু তার পর থেকেই ছবিটা পাল্টাতে থাকে। ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম রাউন্ডে ক্রমশ ব্যবধান কমিয়ে আনেন শমীকবাবু। শেষ অর্থাৎ একাদশ রাউন্ডে বাজিমাত করেন শমীক ভট্টাচার্য। হেরে যান দীপেন্দু বিশ্বাস। শমীকবাবু পেয়েছেন ৭১০০২টি ভোট। আর দীপেন্দু বিশ্বাস পেয়েছেন ৬৯৪১৬টি ভোট।
আরও
পড়ুন:
হাড্ডাহাড্ডি
লড়েও
চৌরঙ্গিতে
হারল
বিজেপি,
জয়ী
নয়না
বন্দ্যোপাধ্যায়
আরও
পড়ুন:
বসিরহাট
হাতছাড়া,
চৌরঙ্গিতে
জামানত
জব্দ,
দুঃসময়
কাটল
না
সিপিএমের
আরও
পড়ুন:
বসিরহাটে
ফের
ভোটগণনা
করতে
হবে,
তৃণমূলের
আবদার
খারিজ
ভোট
কমিশনের
বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে একটা প্রবণতা লক্ষ করার মতো। গ্রামাঞ্চলে ভালো ভোট পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর বসিরহাট ও টাকি শহরে তাদের ধুয়ে দিয়েছে বিজেপি। শহরভিত্তিক এক-একটি বুথের গণনা শেষ হয়েছে আর আনন্দে ফেটে পড়েছেন বিজেপি সমর্থকরা।
লক্ষণীয়, এই আসনে জেতাটা প্রেস্টিজ ইস্যু ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। দলের হেভিওয়েটরা ক্যাম্প করে পড়েছিলেন। কিন্তু মানুষের ইচ্ছের কাছে যে এ সব কিছুই নয়, তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল।
জেতার পর উচ্ছ্বসিত শমীকবাবুর প্রতিক্রিয়া, "এই জয়ে আমার কৃতিত্ব নেই। আমি নিমিত্ত মাত্র। এই জয় বসিরহাটের মানুষের জয়, এই জয় বাংলার মানুষের জয়।" আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, "এটা তৃণমূল কংগ্রেসের শেষের শুরু। যেখানেই অবাধ ভোট হবে, সেখানেই ওরা হারবে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে এটা একটা আলোর দিশা। বসিরহাটে তৃণমূলের বড় বড় নেতারা ভিড় করেছিলেন। ওরা ভোট বানচাল করারও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি।" প্রসঙ্গত, সারদা-কাণ্ড, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার ক্রমাবনতি, মোদী-হাওয়া ইত্যাদিই নির্বাচনে ফ্যাক্টর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বসিরহাট দক্ষিণ আসনটি ২০১১ সালে জিতেছিল সিপিএম। নারায়ণ মুখোপাধ্যায় বিধায়ক হয়েছিলেন। সেই সিপিএম এ বার পাত্তাই করতে পারেনি। এটা সিপিএম তথা বামফ্রন্টের কাছে চিন্তার বিষয় বৈকি! রাজ্য রাজনীতিতে একদা একমেবাদ্বিতীয়ম বামেরা আরও প্রান্তিক হয়ে গেল। আর একদা প্রান্তিক শক্তি বিজেপি উঠে এলে অন্যতম অপ্রতিরোধ্য শক্তি হিসাবে।