কালিঞ্জর দূর্গে আজও ফিসফিস করে ইতিহাস! বেড়ানোয় অন্য স্বাদ যোগ করে এই এলাকা
এক ঐতিহাসিক গন্তব্য উত্তর প্রদেশের কালিঞ্জর দূর্গ। যেখানের ভগ্নস্তূপে আজও ফিসফিস করে ইতিহাস।
ভ্রমণবিলাসীদের মধ্য়ে অনেকেই এমন থাকেন, যাঁরা ইতিহাস পছন্দ করেন। আর ইতিহাসকে আরও একবার অভিজ্ঞতায় বন্দি করতে বেড়াতে চলে যান বিভিন্ন প্রান্তের নানা ঐতিহাসিক স্থানে। এমনই এক ঐতিহাসিক গন্তব্য উত্তর প্রদেশের কালিঞ্জর দূর্গ। যেখানের ভগ্নস্তূপে আজও ফিসফিস করে ইতিহাস।
কালিঞ্জর দূর্গের ইতিহাস
উত্তর প্রদেশের বান্দা জেলায় রয়েছে এই দূর্গ। ১২০৩ ফুটের এই দূর্গে দশম শতাব্দীর বুন্দেলখণ্ডের এক অন্যতম তোখ ধাঁধাঁনো স্থাপত্য ছিল। বিন্ধ্য পর্বতমালা সংলগ্ন এই এলাকাতে এককালে রাজপুত চান্ডেলারা রাজত্ব করেছেন। এরপর সোলাঙ্কি , তথা গুপ্ত বংশ রাজ করেছে এখানে। পরবর্তীকালে এখানে আসেন মুসলিম শাসকরা।
শের শাহ সুরি ও কালিঞ্জর দূর্গ
ইতিহাসের রক্তাক্ত অধ্যায় বলছে, এই কালিঞ্জয় দূর্গে ১৫৪৫ খ্রীষ্টাব্দে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মৃত্যু হয় শের শাহ সুরির। তাঁর আগে মুহম্মদ গজনি ও মুঘল সম্রাট বাবর এই দূর্গে বিভিন্ন যুগদে দখল করেছেন। পরবর্তীকালে সিপাহি বিদ্রোহের সময়ও এই দূর্গ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।
[আরও পড়ুন:রাজস্থানের এইসব জায়গায় আজও লুকিয়ে বহু রহস্য, গা ছমছমে বহু ঘটনা জানুন ফোটোফিচারে]
কালিঞ্জর দূর্গ বেড়ানোর উপযুক্ত সময়
বিন্ধ্যপর্বতের রুক্ষ সৌন্দর্যের মায়ায় নিজেকে হারিয়ে ফেলার হাতছানি অনেকেই এড়াতে পারেন না। গরমকাল বাদে বছরের যেকোনও সময়েই এই ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন বেশ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
কে এই দূর্গের নাম 'কালিঞ্জর'?
সংস্কৃতদতে 'কাল' কথার অর্থ সময়, আর 'জর' কথার অর্থ ধ্বংস। কথিত আছে কণ্ঠে বিষ ধারণের পর শিব নীলকণ্ঠ রূপে এই এলাকায় আসেন। যেখানে তিনি কাল বা সময়কে উপেক্ষা করার শক্তি পান। সেই থেকেই এই দূর্গের তথা এলাকার নাম কালিঞ্জর।
ফটোগ্রাফারদের স্বর্গ!
কালিঞ্জর দূর্গ এমনিতেই ফটোগ্রাফারদের স্বর্গ। যাঁরা ছবি তুলতে ভালোবাসেন, তাঁরা এই জায়গায় পেয়ে যেতে পারেন বহু কিছু রসদ। গুহা থেকে মন্দির থেকে রাজপ্রাসাদ সবই রয়েছে দূর্গে। আর সমস্তটাই পাথরের খোদাইয়ের কাজ।
শিবমন্দির ও কালিঞ্জর দূর্গ
এই দূর্গের মধ্যে রয়েছে নীলকণ্ঠের মন্দির। পুরনো আমলের এরকম এক দূর্গের ভিতর শিবমন্দিরটি রীতিমত তাক লাগায়। যেহেতু কণ্ঠে নীল ধারণ করার পর শিবের শক্তি অপরিসীম হয় বলে বর্ণিত রয়েছে হিন্দু শাস্ত্রে, তাই এখানে সেই অর্থ থেকেই শিবকে পূজা করা হয়। আর সেই আরাধনার উদ্দেশ্য নিয়েই স্থাপিত দূর্গের ভিতরকার এই শিব মন্দির।
কীভাবে যাবেন এই কালিঞ্জরে?
খাজুরাহো বিমানবন্দর থেকে কালিঞ্জর দূর্গ ১০০ কিলোমিটার। আর রেলপথে গেলে, আতারাতে নামতে হবে। সেখান থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে কালিঞ্জর দূর্গ। সড়ক পথে এলাহাবাদ থেকে কালিঞ্জর ২০৫ কিলোমিটার আর খাজুরাহো থেকে ১৩০ কিলোমিটার , আর চিত্রকূট থেকে ৭৮ কিলোমিটার। এখানে যাওয়ার জন্য বহু বাসও পাওয়া যায় বিভিন্ন জায়গা থেকে।